পাগলি~ Pagli ~ Bangla Love story 2021

পাগলী

 “আমি মাহিন,সবেমাত্র HSC লেভেল শেষ করলাম।অনেক পরিশ্রমের পর রাজশাহীতে Law বিষয়ে পড়ার সুযোগ পেলাম। আর কয়েকদিন পরই চলে যাবো রাজশাহীতে। বাবা-মা,ভাই-বোন সহ সবাই


খুব খুশি।কিন্তু একজনের মনের ভেতর যে সাইক্লোন বয়ে যাচ্ছে সেটা অামি ঠিকি বুঝতে পারছি।অাপনারা হয়তো বুঝে গেছেন সে কে। সে অার কেউ না অামার পাগলী অবনি।সবেমাত্র HSC প্রথম বর্ষে পড়ে।অামাকে অনেক ভালোবাসে।অামি কি অার কম ভালোবাসি পাগলীটাকে।

অাপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে পাগলীর ফোন চলে আসছে,রিসিভ করে কথা বলি নাহলে কেঁদে কেঁদে চোখ লাল করে ফেলবে

আমি:হ্যালো বাবুটা কেমন অাছ?

অবনি:,,,,,,,,

আমি:বাবু কি ব্যাপার কথা বলোনা কেন? তুমি ঠিক অাছো তো?

অবনি: হ্যা আমি ঠিক আছি, কেনো ঠিক থাকবোনা।

আমি: অবনি তোমার কথাগুলো এমন শোনাচ্ছে কেনো?(জানি আমি চলে যাবো তাই হয়তো পাগলীটার মন খারাপ)

অবনি:এখন কয়টা বাজে?

আমি:দুপুর 2টা কেনো বাবু।

অবনি: আমার সাথে বিকেল 5টায় নদীর পাড়ে দেখা করতে পারবা?

আমি:হ্যা অবশ্যই।

অবনি:মনে থাকে যেনো bye.

আমি:আচ্ছা বাবুটা bye.

“জানি পাগলীটার মন অনেক খারাপ। ভীষণ ভালোবাসে অামাকে।ওর পাগলামির কোনো শেষ ছিলোনা। কিন্তু দুইদিন ধরে কেমন মনমরা হয়ে গেছে।আচ্ছা চলেন 2.5 বছর পিছনে ফিরে যাই দেখে নিই কিভাবে পাগলীটা অামার জিবনে এসেছিলো ”

” সময়টা ছিলো নভেম্বর মাসের মাঝামাঝি (অামি,অারমান,রিসান,সাইদ,সিফাত

,ফরহাদ,নাইম,আলমগির,আমরা এই কয়জন জিগরি বন্ধু একসাথে Biology পড়তাম মো;তৌহিদুন নবি স্যারের কাছে)।ওই স্যারের মতো বন্ধুসুলভ স্যার অার কোনোদিন পাবো কিনা জানিনা, হয়তো পাবোনা কোনোদিন।স্যার অামাদের সাথে খুব ফ্রি ছিলেন। আর মজার ব্যাপার হলো স্যারের বাসায় তিনি একাই থাকতেন, তাই আমরা মাস্তি করতাম বেশি বেশি।আচ্ছা এই নিয়ে নাহয় অাপনাদের অারেকটা গল্প দিবো। যাই হোক অামাদের ব্যাচ এর আগে আর একটা ব্যাচ পড়তো তাই আমরা স্যারের বাসার সামনে দাড়িয়ে থাকতাম। আর স্যারের বাসার সামনের রাস্তাটা ছিলো মহিলা কলেজ রোড। তাই আমার সব লুচু বন্ধুরা মেয়ে দেখা নিয়ে ব্যস্ত থাকতো।অামি ছিলাম খুব লাজুক ছেলে তাই আমি সবসময় মেয়ে দেখা থেকে বিরত থাকতাম।,,, কথায় আছে না সংগ দোষে লোহা ভাসে,অামার বেলায়ও সেটার ব্যতিক্রম ঘটেনি। অামি কিছুদিন ধরে লক্ষ্য করছিলাম একটা মেয়ে অামাদের প্রাইভেটের সময় স্কুল থেকে বাসায় ফেরে তার এক বান্ধবির সাথে। মেয়েটার চলা-ফেরা,নম্রতা-ভদ্রতা অামাকে অবাক করেছিলো,আর মেয়েটা ছিলো একদম পরীর মতো।কিন্তু আমি কখনো আবেগকে পশ্রয় দিতাম না।স্যার বলেছিলো তোরা যারা প্রেম করিস তারা সবাই ধুতুরার রস খাওয়া।আমি ভাই প্রেম ভালোবাসার ধারের কাছেও ছিলাম না,তাই বাকি বন্ধুদের উঠতে বসতে কটাক্ষ করতাম।তাদের মধ্যে আরমান & সিফাত ছিলো অন্যতম। সত্যি দোস্ত এখনও তোদের অনেক মিস করি। যাই হোক ওই ভদ্র মেয়েটিকে একদিন পরপর দেখা পেতাম। একদিন আচমকা মেয়েটা

অামাকে ডেকে বসলো

মেয়েটি:এই যে ভাইয়া এইদিক আসেন তো একটু


 


মেয়েটা অামাকে ডাকার সাথে সাথে শালা হারামিগুলা মজা নিতে শুরু করে দিছে

মেয়েটা:আপনার নাম কি জানতে পারি?

আমি:জি না আপু, আপনি আসতে পারেন।

মেয়েটি: তার পাশের মেয়েটিকে বললো তোকে বলছিলাম না ছেলেটা different

পাশের মেয়েটি:হ্যা রে তুই ঠিক বলেছিস

মেয়েটি:এটাই হবে আমার মনের মানুষ, আমার রাজকুমার।

আমি ওদের সব কথা শুনতে পাচ্ছিলাম,কারণ অামিও ওদের সাথে হেটে হেটে অাসতেছিলাম

আলমগির: কিরে lacucha (ডেওয়ার scientific নামের প্রজাতিক পদ আমরা সবাই সবাইকে মজা করে এই নামেই ডাকি) মেয়েটা কি বললো তোকে?চিনিস নাকি মেয়েটিকে

আমি:আরে নাহ, আমি কেমন করে চিনবো

আলমগির: দোস্ত মেয়েটা কিন্তু খুবই ভালো। আমার এলাকার সবচেয়ে ভালো মেয়ে,কোনোদিন কোনো ছেলের সাথে কথা বলতে দেখিনি।তোর কপাল খুলছে মনে হয়।

আমি:যাহ শালা lacucha চল পড়তে বসি(এদিকে আমার মনের বেহাল অবস্থা খালি বারবার মেয়েটা কথাই মনে পড়তেছে)

রিসান:স্যার অাসসালামুঅালাইকুম,কেমন আছেন?

স্যার:জি ভালো অাপনারা কেমন অাছেন?( স্যার সবসময় অামাদেরকে অাপনি করেই বলে মাঝে মাঝে তুই করেও বলে)

আমি:হ্যা স্যার ভালো।

আরমান:তুই তো ভালো থাকবিই, তুই ভালো না থাকলে কে ভালো থাকবে।

স্যার:কেনো কি হয়েছে?

রিসান:আর বলিয়েন না স্যার, মাহিনের জন্য অলরেডি ধুতুরার রস তৈরি হয়ে গেছে।

স্যার:কি বলিস!!!!!

রিসান: হ্যা স্যার,,

এরপর যা হওয়ার তা হয়ে গেলো মানে আমার সব খবর “শেষ অালো” দৈনিক পত্রিকায় প্রকাশিত হয়ে গেলো।

আলিমগির বন্ধু আমার স্যারকে মেয়েটার সব কথা মানে গুনাগুন বলে দিলো

স্যার:মাহিন দেরি করে আর লাভ নেই তুইও অন্যদের মতো ধুতুরার রস খেয়ে নেয়ে,হা হা হা (স্যারের সেই ভুবন কাঁপানো বিখ্যাত হাসি)

কিছুদিন পর,,

অাবারও একই জায়গায় দাড়িয়ে অাছি

মেয়েটি:এই যে ভাইয়া এইদিক আসেন

আমি:জি বলেন।

মেয়েটি:ওই দিন তো সব শুনছেন,এখন আপনার মতামত কি?আচ্ছা মতামত জানাতে লাগবে না আগে আপনার মোবাইল নং টা দেন।

অামি:কি মেয়ে রে বাবা(মনে মনে)

মেয়েটি:কি হোলো দিন।

আমি:আচ্ছা নিন 017,,,,,,, (দিয়ে দিলাম কারণ মেয়েটার হাসিটা দেখেই আমি ফিদা হইছিলাম)

এরপর আমাদের দীর্ঘ পথচলা,,,,,,,,,

এই দেখেন আপনাদের সাথে কথা বলতে বলতে বিকাল 4’30 বেজে গেলো, যাই পাগলীর দেখা করে আসি, নাহলে আবার কেঁদে কেঁদে চোখ লাল করে ফেলবে।

আমি:শুভ বিকাল অবনি বাবুটা।

অবনি:শুভ বিকাল।

আমি:কেমন আছে আমার অবনি বাবুটা। দেখি(কপালে হাত দিয়ে দেখলাম না জর তো আসে নি,আসল রোগটা কোথায় সেটা তো অামি জানি)

অবনি:না আমি ঠিক অাছি।তুমি তো খুব খুশি,খুব ভালো আছো তাই না।নতুন জিবন শুরু করবা, নতুন কেউ আসবে তোমার লাইফে,,,,,

আমি:অবনি বেশি বেশি হয়ে যাচ্ছে কিন্তু(কিছুটা রেগে)

অবনি:আচ্ছা রাজশাহীতে যাওয়ার পর কেউ যদি তোমার লাইফে আসে তুমি কি তাকে গ্রহন করবা?

আমি:কোনোদিন না,তাহলে আমার অবনি বাবুটার কি হবে,আর আমার অবনি বাবুটার মতো করে কেউ আমাকে ভালোবাসতে পারবে না

অবনি:তাই না(একটু হেসে) এতই যদি ভালোবাসতেন তাহলে দেখতে পাচ্ছেন না আমাকে শীত লাগতেছে।

আমি:(আমার জ্যাকেট খুলে পাগলীটাকে পড়ায় দিলাম) হইছে এবার খুশিতো।

অবনি:(hmm খুশি অনেক খুশি!!!

আমি:এদিকে আমার অবস্থা কাহিল শীতে ঠকঠক করে কাপতেছি)

অবনি:একি তুমি শীতে কাপতেছ আমাকে বলবা না,,,(এই বলে ওর চাদরটা আমাকে পরায় দিলো)

আমি:ওই তোমার চাদর অাছে তাও আমার জ্যাকেট নিলা কেনো?

অবনি:এমনি বুদ্ধু কোথাকার বুঝেও না।

কিছুক্ষন পর,,

অবনি:বাবু আমার না খুব বেশি শীত লাগতেছে, এখন কি করবো?

আমি:জানি না।

অবনি:তোমার বুকে একটু জরিয়ে নাও

না প্লিজ।

এই বলে পাগলীটা আমার বুকে মুখ লুকিয়ে কাঁদতে লাগলো।

আমি:কাদো কেনো?

অবনি:আমাকে ভুলে যাবা না তো।

আমি: কোনোদিন না বাবু।আমি শুধু তোমার।

অবনি:আচ্ছা এভাবে আর কিছুক্ষণ থাকি,

আমি:ok বাবুটা।

এরপর আমি রাজশাহীতে চলে আসলাম,,,, প্রতিদিন ফোনে কথা হতো পাগলীটার সাথে,,,, দূরে থাকার পরও

আমাদের ভালোবাসা কমেনি,, এভাবে আর কতদিন দেখতে দেখতে আমার অনার্স শেষ হোলো,,,, অাজ একটা কোম্পানিতে যোগদান করলাম বেতন মোটামুটি ভালই বলা চলে,পাগলীটাকে জানাইনি এখনো আজকে বাবা-মাকে নিয়ে যাবো পাগলীটার বাসায় বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে,, চমকে দিবো অামার অবনি বাবুটাকে.......


Writen By Marshal Shawon

Comments

Popular posts from this blog

একটি সাম্প্রদায়িক আয়াত, এবং

একজন অবিশ্বাসীর বিশ্বাস